Subscribe:

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে কেন উধাও হয়ে যায় জাহাজ ও প্লেন? ফাঁস হল রহস্য


আটলান্টিক মহাসাগরে প্রায় ৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় অঞ্চলগুলির একটি। বলা হয়, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭৫টি এরোপ্লেন এবং একশোর বেশি জাহাজ এই অঞ্চল পার হতে গিয়ে রহস্যময়ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছে। সেই থেকে এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করে নানা কল্পনা দানা বেঁধেছে। কেউ বলেছেন, ওই অঞ্চলে আসলে বাসা বেঁধে রয়েছে ভিনগ্রহের প্রাণীরা, কেউ আবার মনে করেছেন, আটলান্টিকের গভীরে রয়ে গিয়েছে কোনও লুপ্ত সাম্রাজ্য। বলা বাহুল্য, এই সমস্ত তত্ত্বের কোনওটিই খুব বিজ্ঞানসম্মত নয়। কিন্তু এবার খোদ বিজ্ঞানীরাই এই রহস্য ভেদ করার লক্ষ্যে এক নতুন তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন।

একদল বিজ্ঞানী মনে করছেন, এই অঞ্চলে স্থায়ী হয়ে থাকা একটি ষড়ভুজাকার মেঘস্তরই জাহাজ ও এরোপ্লেন লোপাট হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে ক্রিয়াশীল। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই ষড়ভুজাকার মেঘস্তর ‘এয়ার বম্ব’ তৈরি করে। যার ফলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের আবহাওয়া সর্বদাই অত্যন্ত খারাপ হয়ে থাকে। আর এই খারাপ আবহাওয়ার শিকার হয়েই পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে জাহাজ ও এরোপ্লেন, এবং শেষমেষ ভেঙে পড়ে তলিয়ে যায় সমুদ্রের গর্ভে।

বিজ্ঞানীদলের অন্তর্গত আবহবিদ র‌্যান্ডি সারভেনি সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, এই ধরনের এয়ার বম্ব আসলে মাইক্রোবার্স্ট নামের উপাদান নিয়ে গড়ে ওঠে। এর প্রভাবে মেঘ থেকে প্রবল বেগে নীচের দিকে হাওয়া নেমে আসে। এই হাওয়ার বেগ ১৭০ মাইল প্রতি ঘন্টার কাছাকাছি হতে পারে। এই তীব্র গতিসম্পন্ন হাওয়া নীচে নেমে এসে সমুদ্রপৃষ্ঠে ধাক্কা খেয়ে চতুর্দিকে ছিটকে পড়ে। এর ফলে তীব্র গতির হাওয়ার একটি আবর্ত তৈরি হয় বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে। এই আবর্তেরই শিকার হয় জাহাজ ও এরোপ্লেনগুলি। নাসার উপগ্রহ চিত্রে নাকি এই ছ’কোণা মেঘস্তরের ছবি ধরা পড়েছে বলে দাবি সারভেনির।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অবশ্য আগেও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই বছরের মার্চ মাসেই একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছিলেন, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে দেড়শো ফুট সমুদ্রগর্ভে নিহিত এবং প্রায় দেড় মাইল বিস্তৃত একটি আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে ক্রমাগত যে বিস্ফোরণ ঘটে তার প্রভাবেই এরোপ্লেন ও জাহাজ এই অঞ্চল পার হতে গিয়ে একেবারে ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। এবারে সারভেনি ও তাঁর সঙ্গীরা অন্য রকম তত্ত্ব খাড়া করলেন। এই তত্ত্ব কতটা যৌক্তিক ভিত্তি পায়, সেটাই এখন দেখার।

এ দেশের মানুষ আমাকে ভোলেনি : রাজ্জাক




আমরা যখন কথা বলছি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান এই তারকার সঙ্গে, তখন ঘুরেফিরে সব কথাই এসে পৌঁছে যাচ্ছে চলচ্চিত্রের ভালো-মন্দের প্রসঙ্গে। রাজ্জাক যে আপাদমস্তক একজন চলচ্চিত্রের মানুষ, সেটাই বোঝা যাচ্ছে পরিষ্কার। কেমন লাগে এই বয়সে, কী ভাবেন এ সময়টাতে?—এমন একটা প্রশ্ন দিয়েই শুরু করি আলাপ। ‘ইচ্ছে ছিল আমরণ চলচ্চিত্রে কাজ করে যাব।’ বললেন রাজ্জাক। ‘আমার খুব চাওয়া, চলচ্চিত্রে কাজ করতে করতেই কোনো এক সময় আমার মৃত্যু হবে। কিন্তু আমি খুব কষ্ট পাই, বুঝলে! আমাদের কী জমজমাট ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিটা ছিল! এই ইন্ডাস্ট্রিতে আছি বলে গর্ব করতাম। আর আজ কী অবস্থা!’ ধরুন, আপনাকে যদি চলচ্চিত্র জগতের একজন মানুষের নাম বলতে বলা হয়, যাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি আপনাকে এ জগতের জন্য তৈরি করেছে, তবে কার নাম করবেন? বিন্দুমাত্র না ভেবে রাজ্জাক বললেন, ‘জহির রায়হান। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমি তখন চলচ্চিত্র জগতে বারবার রিফিউজড হচ্ছি। কেউ আমাকে নিয়ে ভাবছে না। তখন তিনিই একমাত্র মানুষ, যিনি আমাকে বলেছিলেন, “আমি আপনাকে ব্রেক দেব।” তখন তিনি “বাহানা” ছবিটি করছিলেন। সেটা শেষ হলে “হাজার বছর ধরে” করবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু তা আর করা হয়নি। তবে আমাকে স্নেহ দিয়ে, উপদেশ দিয়ে এই জগতের উপযোগী করে তুলেছিলেন তিনি।’ ঘর থেকে তো আপনাকে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি কখনো... হাসলেন রাজ্জাক। বললেন, ‘এ কথাটাও আমি বলতে চাইছিলাম। যখন একটু নাম হলো, যখন মন খুলে কাজ করার কথা, তখন পাশে পেয়েছি স্ত্রী লক্ষ্মীকে। তিনি আমাকে একটা নির্ঝঞ্ঝাট জীবন দিয়েছেন। তখন তো বুঝতেই পারছ, নাম হলে নারীমহলে সাড়া পড়ে যায়। সেগুলো সামলে নিতে পারতাম না, যদি না লক্ষ্মী থাকতেন পাশে। আমার এত দূর আসার পেছনে জহির রায়হান আর লক্ষ্মীর সাহায্য রয়েছে অনেকখানি।’ আপনি জনপ্রিয় মানুষ, রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জড়ানোর কথা ভাবেননি কখনো? ‘আমার জগৎ, ধ্যানজ্ঞান সবই ছিল চলচ্চিত্র ও নাটকে অভিনয়কে কেন্দ্র করে। অভিনয়টাই ছিল রক্তের ভেতর। হ্যাঁ, হয়তো রাজনীতি করতে পারতাম, এমপি-মিনিস্টার হতে পারতাম। কিন্তু ওটা তো আমার স্বপ্ন বা পেশা নয়। আমি স্বপ্ন দেখেছি নায়ক হব, ভালো অভিনেতা হব। নিজের অন্তরে যা বসাতে পারব না, সেটা পেশা হিসেবে গ্রহণ করব কেন? আমার তো পারিবারিক রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। আমি কেন রাজনীতি করব?’ চলচ্চিত্রের তো এখন দৈন্যদশা। বাঁচার উপায় কিছু দেখছেন? ‘যখন আমরা চলচ্চিত্রে অভিনয় করা শুরু করেছি, তখন কেউ টাকার দিকে তাকাইনি। ছবি হিট করলেও পয়সা চাইনি। দুবেলা ডাল-ভাত খেতে পারলেই মনে হতো শান্তিতে আছি। একসময় বাঙালি পরিচালকেরা বাংলা ছবি ফ্লপ হয় বলে উর্দু ছবি বানাতে শুরু করলেন। আমরা প্রতিজ্ঞা করলাম, বাংলা চলচ্চিত্রশিল্পটাকে বাঁচাব। পরিচালক-অভিনয়শিল্পী-গায়ক-সংগীত পরিচালক—সবাই মিলে আমরা সেই চেষ্টা চালিয়ে গেছি। তখন প্রযোজকের সঙ্গে প্রযোজকের ছিল ভালো সম্পর্ক। এখন তো প্রযোজক-প্রযোজক দূরের কথা, শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীরই সুসম্পর্ক নেই। সে সময় কী অসাধারণ সব ছবি তৈরি হয়েছে! ‘আগুন নিয়ে খেলা’র পর অনেকেই বাংলা ছবির দিকে ঝুঁকলেন। নির্মাণ করা হলো নীল আকাশের নিচে। বাংলা চলচ্চিত্রকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সে কী সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা!’ এখন তা নেই কেন? ‘কী করে থাকবে? কারও সঙ্গে কারও সুসম্পর্ক নেই। সবাই টাকার পেছনে দৌড়াচ্ছে। শিল্প নির্মাণ করার সময় কোথায়? অবস্থা কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে, জানো? সিনেমা হলের মেশিনের ভাড়াটাও এখন দিতে হচ্ছে প্রযোজককে। অবস্থা এমন হলে চলচ্চিত্রশিল্প বাঁচবে কী করে? এফডিসির কী দৈন্যদশা! সমিতি তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন, তারা চা খাচ্ছে, পিকনিক করছে। কিন্তু চলচ্চিত্রটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে, সে খোঁজ রাখছে না কেউ!’ পঁচাত্তরের দিকে হাঁটা শুরু করার আগমুহূর্তে নিজের ভাবনার কথা বলুন। ‘এত সব কষ্টের মধ্যেও আনন্দে আছি। আমি যখন “রাজ্জাক” হিসেবে দর্শকের মনে জন্মগ্রহণ করলাম, তখন এ দেশের মানুষ ছিল সাড়ে সাত কোটি। এখন প্রায় ১৭ কোটি। এখন আমি ১৭ কোটি মানুষের দোয়া-আশীর্বাদ পাচ্ছি। আমার সবচেয়ে ভালো লাগছে এই ভেবে যে এ দেশের মানুষ আমাকে ভোলেনি।’

সুত্র :প্রথম আলো

বাবার জন্য আপনারা দোয়া করেন: সম্রাট


কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন ছেলে খালিদ হোসেইন সম্রাট। সোমবার সন্ধ্যায় বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আপনারা বাবার জন্য দোয়া করবেন। এখন দোয়া ছাড়া কিছু করার নেই। ভাই (বাপ্পারাজ) দেশের বাইরে। তাঁর সঙ্গে কথা বলে দাফন ও অন্যান্য বিষয়ে রাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী নায়করাজ রাজ্জাক ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

সুত্র :প্রথম আলো