Subscribe:

ডিভোর্সের পর মেয়েরা একা থাকতে পারে না, এই ধারণাটি কতটুকু সত্যি?



ডিভোর্সের পর মেয়েরা একা থাকতে পারে না, এই ধারণাটি কতটুকু সত্যি?

হ্যাঁ, ঠিক এই প্রশ্নটিই আমি করেছিলাম আমার পরিচিত-অপরিচিত অসংখ্য মানুষকে। আমাদের সমাজের অত্যন্ত প্রচলিত একটি ধারণা হচ্ছে- “ডিভোর্সের পর মেয়েরা একা থাকতে পারে না!” শুধু ধারণা হয়, বলা যায় বদ্ধমুল ধারণা। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও অসংখ্য মেয়ে এই ধারণাটির কারণে সম্পূর্ণ জীবনটি কাটিয়ে দেন কষ্ট আর হতাশায়।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই ধারণাটি কতটুকু সত্যি? বা এই ধারণাটা নিয়ে কী ভাবেন বর্তমানের নারী-পুরুষ?

যাদের কখনো ডিভোর্স হয়নি বা খুব কাছের কারো ডিভোর্স দেখা হয়নি… তাঁরা হয়তো কখনোই বুঝতে পারবেন না মূল অবস্থাটি। কিন্তু যারা গিয়েছেন বা এখনও যাচ্ছেন এই পরিস্থিতির মাঝ দিয়ে? হ্যাঁ, একমাত্র তারাই বলতে পারবেন যে সত্যিকারের পরিস্থিতিতি কেমন। আর তাই আমার প্রশ্নটি ছিল এমন কয়েকজন নারীর কাছে, যিনি ডিভোর্স পরবর্তী সময়টি মোকাবেলা করেছেন বা খুব কাছের কারো ডিভোর্স দেখেছেন। আমি জানতে চেয়েছিলাম এই ব্যাপারে তিনি কী মনে করেন, জানতে চেয়েছিলাম তাঁদের জীবনের ঝড়ঝাপটা গুলোর কথা। কী জবাব মিল? তাঁদের মন্তব্যগুলো নাহয় হুবহু-ই তুলে দিচ্ছি পাঠকের জন্য। বাকিটা পাঠক নিজ বিবেক দিয়ে বিবেচনা করবেন।

কাজী নাজিয়া মুশতারী (৩০)
নারী উদ্যোক্তা , রাজশাহী।
আমি থাকি আম্মুর সাথে.. সেরকমভাবে কোন সমস্যায় পড়িনি, বিকজ অফ আমার ভয়াবহ অ্যারোগেন্ট ইমেজের জন্য। এবং এটা আমি নিজেই বানিয়েছি। আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে আমি অচ্ছুত হয়ে গেছি, আমার কেউ নাই- এরকম লুতুপুতু ইমেজ বানালে যে কেউ বিরক্ত করতে আসবে। আর সবচে মজার বিষয় হচ্ছে আমার ব্যাপারটা থানা পুলিশ জেল অব্দি গড়িয়েছিল, কিছুটা হলেও শাস্তি দিতে পেরেছিলাম, তাই সবাই এই ভয়টাও পায় কীভাবে লাল দালানে চালান দিতে হয় সেটা আমি জানি, তাই আমাকে না ঘাটানোই ভাল। আর একা থাকার আরেকটা বিষয় নিয়ে সমস্যা হয় সেটা হলো বাসাভাড়া কেউ দিতে চায়না, আবার বাচ্চার স্কুলে অন্য মহিলাদের অযথা কৌতুহল এবং সব সময় নিজেকে একটু সাবধানে রাখতে হয় যাতে কেউ গুজব রটাতে না পারে। তবে এগুলাও মেন্টেন করা যায়। আমরা কেউ ছোট বাচ্চা তো না যে নিজের অসুবিধা বুঝবোনা। একা থাকার সবচে বড় শর্ত হচ্ছে স্বাবলম্বী হওয়া, স্বাবলম্বী যে কেউ একা থাকতে পারে। কারো অনুগ্রহে বা অধীনে বাঁচতে গেলেই একা থাকাটা আর হয়ে ওঠেনা।

সাবরিনা খান (৩৪)
ব্যাংকার, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা।
আমি ঠিক একা না। মা সাথে থাকে। দোকা থাকা অবস্থাই মা আমার সাথে থাকতো। তবে মা আমাকে আবার বিয়ে করতে আগ্রহী নই বলে ফ্ল্যাট কিনতে বলে। সে সহ সবাই ভয় দেখায় মা চিরজীবন থাকবে না, তখন আমার থাকার জায়গা থাকবেনা। আমি ভাবছি শুধু থাকার জায়গার জন্য কি বিয়ে করা লাগবে!

শাফিয়া (২৮)
গৃহিণী, মিরপুর
সমাজের মানুষ তো একা থাকলেও বলবে, দোকা থাকলেও বলবে। একা বা দোকা থাকা সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যাপার হওয়া উচিৎ। তবে সমাজের কথাটা একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো ও নয়। কারণ-
১. প্রতিটা মানুষেরই একজন সংগী লাগে। যে সুখে দু:খে পাশে থাকবে। মানছি মেয়েরা অনেক স্ট্রং, তারপরও, লাগে কিন্তু একজনকে। শারীরিক মানসিক চাহিদা পূরণের জন্য। অনেকেই হয়তো শারীরিক চাহিদা উপেক্ষা করে থাকতে পারে (রেশিওটা অনেক কম কারণ শারীরিক সম্পর্ক একবার হলে সেটাকে অগ্রাহ্য করাটা টাফ), অনেকে না পারায় অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। আবার কেউ হয়তো মানসিক সাপোর্ট এর জন্যও একা থাকতে চায় না।
২. এই সমাজের মানুষই একা থাকতে দিবে না। একা মেয়ে সাবলেটে থাকলেও খারাপ, একা থাকে। আবার চাকরি খুঁজতে গেলেও আগে বিছানায় যাওয়ার প্রস্তাব পায়…. তো বেশিরভাগ মানুষই যেহেতু সুযোগ সন্ধানী তারা তো এভাবেই দেখবে যে একা মানেই একা না, নিশ্চয়ই তার অবৈধ সম্পর্ক আছে। এই বাঁকা চোখটা এড়িয়ে ফাইট করতে ফ্যামিলি সাপোর্ট লাগে যেটা অনেকেই পায়না।
৩. বেশিরভাগ পরিবারের কাছেই এখনো ডিভোর্সি মেয়ে মানেই বোঝা। তাকে যে কোন ধরনের সাপোর্ট দিতে তারা নারাজ।
বাট আমার নিজের যা মনে হয়েছিলো এবার তাই বলি। প্রতিটা মেয়েই নিজের একটা সংসারের স্বপ্ন দেখে। খুবই স্ট্রং একটা কারণে আমার প্রথম বিয়েটা টেকেনি। ৭ বছর চেষ্টা করেছি টেকানোর জন্য। বাট যেটা হওয়ার নয় সেটা হয়না। প্রথমে ভেবেছিলাম স্বাবলম্বী হই। বাট যেখানেই জবের জন্য যেতাম, আকারে ইংগিতে আমাকে বিছানায় শোয়ার আভাস দিতো। নিজের প্রতিই একসময় ঘেন্না লাগা শুরু হলো, যে আমারই নিশ্চয় কিছু একটা প্রবলেম, নাহলে সবাই এই নজরেই কেন দেখবে। তাই একা থাকার চিন্তা বাদ দিয়ে নতুন করে সংসার নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিলাম কারণ বিয়ে ভাংগাতে তো আমার দোষ ছিলো না। স্বাভাবিক একটা জীবন চেয়েছিলাম। কারণ তখন হয়তো বয়স কম ছিলো। বাট একটা সময় বয়স বাড়বে। শেয়ারিং কেয়ারিং এর জন্য হলেও জীবনে কাউকে প্রয়োজন। ছোট ছোট স্বপ্ন পূরণের স্বাদ শেয়ার করার জন্য হলেও কাউকে প্রয়োজন। আর আমাদের ধর্মেও কোথাও লেখা নেই যে ডিভোর্স হলে আর বিয়ে শাদি করা যাবে না। বরং সংসারের তাগিদই দেয়া আছে। ব্যক্তির সর্ব প্রকার শান্তির জন্যই আমার মনে হয় একা থাকাটা ঠিক নয়। তবে সবারই এমনটা মনে হবে তা নয়, কারো সাপোর্ট পাইনি তাই হয়তো এমন মনে হয়েছে, ফ্যামিলি সাপোর্ট পেলে হয়তো অন্যরকম ভাবতাম। আসলে যার যার ভাবনা তার তার কাছে যেটা ডিপেন্ড করে সিচুয়েশন এর উপর।

নাজমুন নাহার (২৮)
সেন্ট্রাল হসপিটাল
ব্রাক্ষনবাড়ীয়া।
নিজের সমস্যাটাই বলি, সাত বছর সংসার করার পর হ্যাজবেন্ডের সাইকোলজিক্যাল প্রবলেম এবং পারিবারিক কুটনীতির চালে ডিভোর্স হয়ে যায়। দুবছর একা আছি, প্রাইভেট হসপিটালে জব করি। সমাজ পারিবারিক অবস্থানের কারণে একা থাকা সম্ভবনা পারিবারিক সাপোর্ট কখনোই পাইনি। বরং পরিবার এবং আশপাশ থেকে শুনতে হয় মা-বাবা চিরদিন থাকে না, আবার নতুন করে চিন্তা কর, ভাইবোনরা সবসময় দেখবে না, তাছাড়া সমাজ কি বলবে? আমার প্রশ্ন কেন? সমাজ কি আলাদা কিছু, সমাজ তো আমরাই তৈরী করি। ভাইদের সংসার হবে, বোনের বিয়ে হবে, ঘরে ডিভোর্সী বোন থাকলে সমস্যা- এই ধারণা সমাজে পরিবারে কি আমরা ছড়িয়ে দিচ্ছিনা? হ্যাঁ, দিনশেষে নিজেকে একা লাগে মনে হয় পাশে কাউকে দরকার এই দরকারটা কি শুধু সামাজিক পরিচিতির জন্য নাকি নিজের ভাল থাকার জন্য? সমাজের জন্য রিলেটিভদের জন্য তো সাত বছর নিজেকে সুখী কাপল সাজিয়েছি তাতে নিজে কতটুকু হ্যাপি হয়েছি… দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো। প্রাচুর্য না থাকুক আত্মতৃপ্তি মানসিক শান্তি তো মেলে। আতংকিত জীবন থেকে মুক্তি। হ্যাঁ, এটা সত্যি পারিপার্শ্বিক সব অবস্থা চিন্তা করে একা থাকাটা এই সমাজে নিরাপদ না। ধন্যবাদ আপু।

রোদসী জামান
সরকারি সাদত কলেজ,টাঙ্গাইল।
ডিভোর্সী মেয়েদের আমাদের সমাজ ভাল চোখে দেখে না, আপু। এমনকি আত্নীয় সজন ও প্রতিবেশীদের কথা জীবন অতিষ্ট করে দেয়।প্রায় আড়াই বছর হল ডিভোর্সের এখনও শুনতে হয় আর একটু সহ্য করে গেলেই নাকি পারতাম।কিন্তু আমি জানি ওটা আমার জীবনের সব থেকে ভাল সিদ্ধান্ত ছিল।আর একা থাকা না থাকা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়।তুমি যদি মুভ অন করতে রেডি থাকো আর এমন কাউকে খুঁজে পাও যে তোমাকে বুঝে,তোমাকে সন্মান করে তাহলে কেন তার সাথে থাকবে না?

চেক লিখতে এ ভুল করলে ফাঁকা হয়ে যাবে অ্যাকাউন্ট!


টাকা পয়সার বড় বড় সব লেনদেন হয় চেকের মাধ্যমে। সরাসরি লেনদেনের ক্ষেত্রে এটাই নিরাপদ পন্থা হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু প্রযুক্তি এমনভাবে উন্নতি হচ্ছে, তাতে চেকের মাধ্যমেও ফাঁকা হয়ে যেতে পারে আপনার অ্যাকাউন্ট।

টাকার লেনদেনের জন্য যে জিনিসটি সবথেকে বেশি বিশ্বাসযোগ্য এবং নিরাপদ বলে মনে করা হয়, সেটি হল চেক। যতই নিরাপদ হোক, চেক সই করে কাউকে দেওয়ার সময়ে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। না হলে সেই চেক বাতিল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

• যাঁকে টাকা দেবেন তাঁর নাম চেক-এ লিখতে হয়। কিন্তু সেই নাম লেখার সময়েও খুব সাবধানতা বজায় রাখা উচিত। ধরুন অমিত রায় নামক কারোর নাম লিখলেন। নাম ও পদবীর মধ্যে বুঝে ফাঁকা জায়গা রাখুন। না হলে অমিত-কে অমিতা বানিয়ে ফেলতে খুব একটা সমস্যা হবে না। এই ধরনের জালিয়াতি থেকে বাঁচতে, যাঁকে টাকা দিচ্ছেন তাঁর নামের পাশে তাঁর অ্যাকাউন্ট নম্বরটিও যুক্ত করে দিন।

• পেয়ি-র বা যাঁকে টাকা দেবেন তাঁর নাম লেখা হলে, তাঁর নামের পাশে একটি লাইন টেনে দিন।

• ‘বেয়ারার চেক’ কাউকে দিলে অবশ্যই ‘বেয়ারার’ অপশনে টিক দিয়ে দিন। ধরুন আপনি কারোকে ‘বেয়ারার চেক’ দিচ্ছেন, যদি সেই চেক-এ যদি ‘বেয়ারার’ অপশনে টিক না দেন তা হলে ওই চেক থেকে যে কেউ টাকা তুলে নিতে পারবেন।

• চেক-এর অ্যামাউন্ট বসানোর পরে অবশ্যই ‘/-’ এই চিহ্ন দেবেন। তাতে কোনও ভাবেই অতিরিক্ত কোনও সংখ্যা বসিয়ে কেউ জালিয়াতি করতে পারবেন না। প্রতিটি সংখ্যার মধ্যে যেন কোনও ফাঁকা জায়গা না থাকে।

• ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে যে স্বাক্ষর করছেন, সেই স্বাক্ষরটিই চেক দেওয়ার সময়ে করবেন। আপনি যদি কোনও কোম্পানির হয়ে টাকা দেন, তা হলে কোম্পানির সিলের ছাপ দিয়ে দিন।

• চেক-এ যদি ভুল কিছু লিখে থাকেন, তা হলে সেই ভুল লেখার উপরে বা নীচে স্বাক্ষর করে দিন।

• রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, একটি চেক তিন মাসের জন্য বৈধ থাকে। তাই অবশ্যই চেক-এ তারিখ লিখুন। না হলে কেউ অনায়াসে তারিখ বসিয়ে সেই চেক ব্যবহার করতে পারবেন।

• অনেক সময়েই অনেক চেক বাতিল হয়ে যায়। সেই ক্ষেত্রে চেকটি ছিঁড়ে ফেলুন। আর না হলে চেকটিতে ‘ক্যানসেলড’ লিখে দিন।

বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, বাড়ছে দুর্ভোগ!


সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ভোগ। বানভাসী পরিবারের মাঝে খাদ্য, বাসস্থান, বিশুদ্ধ পানির অভাব তীব্র আকার ধারণ করছে।

যুগান্তরের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

রংপুর ব্যুরো
রংপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা, ঘাঘট ও যমুনেশাবরীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। পানিবন্দি কাউনিয়া, পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্য, বাসস্থান, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও কর্ম সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে।

লালমনিরহাট ও গঙ্গাচড়ায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুর্গমচরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ সামগ্রী অপ্রতুল হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি, কোলকোন্দ, নোহালী, গজঘন্টা ও মর্নেয়া ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত মনুষের সংখ্যা বেশি। এসব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, গজঘন্টা স্কুল এন্ড কলেজ, নোহালীর কেএনবি উচচ বিদ্যালয়, কোলকোন্দ আব্দুস সামাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্র এখনও মানুষ অবস্থান করছে।

স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত রাত থেকে প্রায় আট শতাধিক পরিবারের মাঝে চার হাজার কেজি মুড়ি ও চিড়া ও সাড়ে ৩শ’কেজি গুড় বিতরণ করা হয়েছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল থেকে বন্যার পানিবন্দি হয়ে পরিবারগুলোকে সেনা ও স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কাউনিয়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে বন্যার কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। কোনো কোনো বাড়িতে হাটু থেকে কোমার পর্যন্ত পানি রয়েছে। চার ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ ১৭টি গ্রামে চলছে খাদ্য সংকট।

উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে ছয় মেট্রিকটন চাউল বরাদ্দ হলেও অপর দুইটি হরাগাছ ও শহীদবাগ ইউনিয়নে কোনো বরাদ্দ পায়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপঙ্কর রায় জানান, বন্যা কবলিত ইউনিয়ন গুলোতে ১০টন জিআর  চাল ও বানভাসী মানুষের জন্য ৪৪৭প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

পীরগাছা উপজেলায় বন্যার পানি কমলেও সেখানে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পানিবন্দি হয়ে ২৫ হাজার পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তাম্বলপুর ও ছাওলা ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ এখনও পানিবন্দি।

অধিকাংশ পরিবার বাঁধের উঁচু স্থানে ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাদ্য দেখা দিয়েছে। তিস্তা নদীর বোল্ডারের মাথা নামক স্থানে ক্রস বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় চরজীবীকায়ন প্রকল্পের প্রায় ছয় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ সব এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি।

তবে ত্রাণ তৎপরতার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে চাহিদা দেয়া হয়েছে বলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার(ভূমি) আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।

রংপুর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি দুর্গতদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান।

লালমনিরহাট
জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। এ জেলার ১০৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে বানভাসীরা আশ্রয় নিয়েছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত জেলায় ৮লাখ টাকা, ২৪২ মেট্রিকটন চাল ও ২হাজার কেজি শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোর।

পাটগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নুর কূতুবুল আলম জানান, বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে অনেকে বাড়িতে ফিরতে শুরু করছে।

সিরাজগঞ্জ
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক গতিতে বৃদ্ধি পেয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় যমুনা নদীর পানি বিপদ সীমার ১৩১সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এতে জেলার সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মোল্লা বলেন, এ ইউনিয়নের কমপক্ষে দেড় হাজার বাড়িঘর বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। চারটি আশ্রয় কেন্দ্র থাকলেও দূরত্বের কারণে কেউ সেখানে যেতে চান না।

মঙ্গলবার পাঁচ টন চাউল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে দুর্গতদের মধ্যে এসব চার বিতরণ করা হবে বলে তিনি জানান।

বগুড়া ব্যুরো
বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে কালিতলা হার্ড পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার ১২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

বিকালে কালিতলার উত্তরপাশে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ৫০ মিটার অংশের ব্লক ২-৩ ইঞ্চি দেবে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, কালিতলা হার্ড পয়েন্ট এলাকায় মঙ্গলবার বিকালে যমুনা নদীতে পানি বেড়ে বিপদসীমার ১২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্ব পাশে ১২ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত দুই হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি। অনেক পরিবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভুতবাড়ি ৩টি, রঘুনাথপুরে ১টি, বানিয়াজানে ২টি ও চুনিয়াপাড়ায় ২টিসহ মোট ১০ পয়েন্ট ফাঁটল দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড পশ্চিম পাশে বালুর বস্তা ফেলছে।

জামালপুর
জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যায় জেলার অন্তত সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণের জন্য হাহাকার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে একজন মারা গেছে।

জামালপুর জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ি, জামালপুর সদর ও বকশিগঞ্জ উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভার অধিকাংশ এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে।

মঙ্গলবার মেলান্দহের কুলিয় সুইস গেটে পানিতে ডুবে মো. কমল (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্র মারা গেছে। কমল মেলান্দহের টনকী গ্রামের টাবু শেখের পুত্র।

জামালপুর জেলা ত্রাণশাখা সূত্রে জানা গেছে, জামালপুরের ৫৫টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভা বন্যা কবলিত হয়েছে। সরকারি হিসেবে এসব এলাকার সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর জানান, জেলার বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য ১২৮ মেট্রিক টন চাল, দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি জানান, পর্যাপ্ত পরিমানে ত্রাণ আছে। জেলা প্রশাসন বন্যার্তদের পাশে থেকে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে।

নওগাঁ
নওগাঁয় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ১৪টি স্থান ভেঙে গেছে। এরমধ্যে মান্দায় ৬টি, রানীনগর ৫টি, আত্রাইয়ে ২টি ও পত্নীতলায় ১টি বাঁধ ভেঙে গেছে। এসব এলাকা এখন পানির নিচে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর ছোট যমুনা নদীতে পানি বিপদ সীমার ৮৮ সেন্টিমিটার, ধামইরহাট উপজেলার শিমুলতলী আত্রাই নদী ১৭০ সেন্টিমিটার, মান্দায় আত্রাই নদী জোতবাজার ১১১ সেন্টিমিটার এবং আত্রাই উপজেলার আত্রাই নদীতে ৪৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিভিন্ন উপজেলায় নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৪০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

এ দিকে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা শুরু হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় তুলনায় ত্রান খুবই অপ্রতুল বলে জানা গেছে।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ত্রান বিতরণ শুরু করা হয়েছে।

মাদারগঞ্জ (জামালপুর)
সোমবার রাতে জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌর সভার চাঁদপুর-ভোলারচর চার কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি অংশ ভেঙ্গে গেছে। এসময় স্রোতে ভেসে গেছে আটটি বাড়ি। আরো শতাধিক বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়ার হুমকি রয়েছে।

বাঁধের পূর্ব পাশের সুখনগরী, খিলকাটি, ফুলজোড়, বন্ধচতল, জামদহ গ্রামসহ অন্তত ১৪টি গ্রামের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।

মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য চার মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা)
মঙ্গলবার সকাল ৮টায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের চেরেঙ্গা গ্রামে পানির প্রবল চাপে চেরেঙ্গা বাঁধের ৩০ ফিট ধসে যায়। এতে নতুন করে চেরেঙ্গা, কিশামত চেরেঙ্গা, করিয়াটাসহ একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।

এর আগে উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউপির টোংরারদহ এলাকায় করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৬০ফিট অংশ ধসে বড় শিমুলতলা, তেকানী, প্রজাপাড়া, কেশবপুর, চকবালা, সগুনা, পশ্চিম মির্জাপুর, কাশিয়াবাড়ী, কিশোরগাড়ী, গনকপাড়া, হাসানখোর, জাফর, মুংলিশপুরসহ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, সহকারী ভূমি কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুল ইসলামসহ একটি টিম ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধটি পরিদর্শন করেছেন।

বিশ্বনাথ (সিলেট)
কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলার উত্তরাঞ্চল লামাকাজী ইউনিয়নের তিলকপুর, রসুলপুর, লামাকাজীবাজার, মির্জারগাঁও, মাহতাবপুর, শাহপুর,খোজারপাড়া, মাধবপুর, কেশবপুর, সাঙ্গিরাই ও মোল্লারগাঁও গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সোমবার বিকালে লামাকাজী ইউনিয়নের পানিবন্দি লোকজনের মধ্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়র  ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়াও মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার তিনশ'পানিবন্দি মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন।

ধামইরহাট (নওগাঁ)
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ডুবে গেছে বাড়িঘর ও ক্ষেতের ফসল। এখনও উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়নি।

ভারতের উজান থেকে পানি আসায় উপজেলার আত্রাই নদীর পশ্চিম পার্শের পাড়ের তালতলী নামকস্থানে বাঁধ ভেঙ্গে খেলনা ইউনিয়ন, আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়ন, ইসবপুর ইউনিয়ন ও আলমপুর ইউনিয়নের অনেক গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে।

ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সফিউজ্জামান ভুইয়া জানান, ত্রাণের চাহিদা জেলা প্রশাসন জানানো হয়েছে।

বন্যায় দিনাজপুর ও জামালপুরে আরও ৫ জনের মৃত্যু!!!

বন্যায় দিনাজপুর ও জামালপুরে আরও ৫ জনের মৃত্যুঃ

দেশে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যায় মঙ্গলবার দিনাজপুর ও জামালপুরে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার দিনাজপুর সদর, পার্বতীপুর ও বিরল উপজেলায় চারজন ও জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় বন্যা জনিত কারণে একজনের মৃত্যু হয়।

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। একটি নদী বিপদসীমার কিছুটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সব নদীর পানি এখনও বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যায় দিনাজপুর জেলায় মঙ্গলবার মারা গেছে আরও চারজন। তারা হলেন- পার্বতীপুর উপজেলার নামাপাগড়া গ্রামের আতাবুর রহমান (৫৫), দিনাজপুর সদর উপজেলার সুইহারী রহমান পাড়ার আজাদ মিয়ার ছেলে হুময়ুন আহমেদ (১৬), বিরল উপজেলার গড়বাড়ী গ্রামের মৃত সুরাই মুর্মুর মেয়ে মালিয়া মুর্মু (৫৯) এবং একই উপজেলার ভূমিগড় গ্রামের আফসার আলীর ছেলে মাসুদুর রহমান (১৫)।

এ নিয়ে দিনাজপুরে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২২ জনে। এর আগে গত শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত দিনাজপুরে বন্যায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড-এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান জানান, দিনাজপুরের পুনর্ভবা নদীর পানি বিপদসীমার দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার, আত্রাই নদীর পানি দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ইছামতি নদীর পানি কিছুটা কমে বিপদসীমার দশমিক ৪১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যায় জেলার অন্তত সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে।

মঙ্গলবার মেলান্দহের কুলিয় সুইস গেটে পানিতে ডুবে মো. কমল (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্র মারা গেছে। কমল মেলান্দহের টনকী গ্রামের টাবু শেখের পুত্র।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর জানান, জেলার বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য ১২৮ মেট্রিক টন চাল, দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন বন্যার্তদের পাশে থেকে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

রিলেশন ব্রেকআপ হওয়ার পর যে ৭টি প্রভাব আপনার উপড় পড়বে? কি করবেন তখন? জেনে নিন!!



রিলেশনশিপ জিনিসটা অনেক পাওয়ারফুল একটা জিনিস। এটার ফলে আমাদের লাইফে অনেক প্রভাব পড়ে। আপনি হয়তো কাওকে অনেক বেশি বিশ্বাস করেন। বাট, কোনো এক সময়, কোনো এক কারনে সে আপনাকে অবহেলা করে চলে গেলো। এতে অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েরা অনেক বেশি ভেঙ্গে পড়ে, এমনকি সে ছেলেটার প্রতি হিংসায় জ্বলে-পুড়ে যায়। আবার অনেকে বিষয়টাকে অনেক সিম্পলি নিলেও মনে মনে অনেক কস্ট পায়। একেক জনে একেক ধরনের ব্যবহার করলেও, সবাই কিন্তু কস্ট পায়। এটা তাদের অনেক পেইন দেয়। এরকম মূহুর্তে আপনি করবেন? আজকে আমি কয়েকটা বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরবো-
আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে- এই সময় আপনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবেন। জীবনটা আপনার। সো, সিদ্ধান্তটাও আপনাকেই নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার জন্য কয়েটি পথ খোলা রয়েছে। প্রথমত, আপনি কান্না শুরু করে দিতে পারেন, আর আল্লাহর কাছে এই বলে দোয়া করতে পারেন যে, হায় আল্লাহ, এইটা আমার কি ক্ষতি করলে তুমি ? আর ছেলেটির জন্য অমংগল কামনা করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে পারেন এই বলে যে, তোমার অনেক রহমত আল্লাহ। তুমি এমন এক ছেলেকে আমার জীবন থেকে সরিয়ে দিয়েছো, যে কিনা আমাকে একটুও ভালোবাসে না।
ধুরে কোথাও ঘুরতে চলে যান- সম্প্রতি যদি কারো সাথে আপনার ব্রেক-আপ হয়ে থাকে তাহলে আপনার মুডটাকে ফ্রেশ করার জন্য এই কাজটা করতে পারেন। এতে আপনার মন শুধু ভালো হবেনা, বরং আপনার মাথায় ঘুরতে থাকা ভুত-পেত গুলাও বের হয়ে। এতে মানসিকভাবে আপনি অনেক বেশি শক্ত হয়ে যাবেন।
সৃষ্টিকর্তার উপড় ভরসা রাখুন- একটা কথা মনে রাখবেন, আমরা যা কিছু করি, যা কিছু হয় আমাদের সাথে তার সবই আমাদের সৃষ্টিকর্তা জানেন এবং উনার ইচ্ছাতেই সবকিছু হয়। আপনার সাথে খারাপ কিছু হলেই এতোসহজে ভেঙ্গে পরার কোনো মানে নেই। ধৈর্য ধরুন, আর আল্লাহকে স্মরন করুন। কারন সবাই আপনাকে হতাশ করলেও একজন করবে না। উনি হলেন, আমাদের সৃষ্টিকর্তা।
সাহস রাখুন- আপনার সাহসীকতায় আপনাকে টিকেয়ে রাখবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এটা একটা পরিক্ষা মাত্র। আর আপনি কি সাহসীকতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ভয় পাইতেছেন? এইটুকু সাহস না থাকলে আপনার জীবনের কোনো মূল্যই নাই। কেও অকারনে আপনাকে কিছু করে চলে যাবে আর আপনি চুপ করে বসে থাকবেন? এটা হতে পারেনা।
আপনার ভালোবাসাকে টিকিয়ে রাখুন

মাথাব্যথা,হাতে পায়ের জয়েন্টে ব্যথা,ঘাড় ও কাধের ব্যথায় পান করুন ‘ব্যথানাশক’ চা। জেনে কিভাবে বানাবেন??


মাথাব্যথা, হাতে পায়ের জয়েন্টে ব্যথা, মাংসপেশি আড়ষ্টতায় ব্যথা, ঘাড় ও কাধের ব্যথায় অনেকেই কাবু হয়ে পড়েন।এই ধরনের ব্যথাগুলো দীর্ঘ মেয়াদী হয়ে থাকে।একবার শুরু হলে সহজে পিছু ছাড়তে চায় না।
আবার এইধরনের ব্যথার পেছনে এই ব্যস্ত যুগে ব্যয় করার মতো সময়ও হয়ে উঠে না। অনেকেই ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে এই ব্যথা কমিয়ে থাকেন। কিন্তু ব্যথানাশক ওষুধের রয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যা দেহের জন্য অনেক খারাপ।
তাই এই সকল শারীরিক ব্যথা দূর করতে প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করাই ভালো। ভাবছেন এই ব্যথা দূর করতে কী করা যায়?
চলুন তবে দেখে নেয়া যাক এক ধরনের ব্যথানাশক চা তৈরির পদ্ধতি যা দূর করবে শারীরিক দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা।
যা যা লাগবে:
২ কাপ পানি
২ চা চামচ চা পাতা
১ চা চামচ তাজা আদা কুচি
২ টি এলাচি (ছেঁচে নেয়া)
১/৪ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো
১/২ কাপ বাদাম দুধ (বাদাম দুধ না পেলে সাধারণ গরুর দুধ নিতে পারেন)
১/৪ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো বা সামান্য কাঁচা হলুদ বাটা
২ চা চামচ মধু
চা তৈরির পদ্ধতি: চুলায় একটি পাত্রে দুই কাপ পানি গরম হতে দিন। পানি গরম হলে এতে আদা কুচি, হলুদ গুঁড়ো/বাটা, দারুচিনি ও এলাচি দিয়ে হালকা আঁচে ১০ মিনিট ফুটতে দিন।
১০ মিনিট ফুটে পানির রঙ হলদেটে হয়ে এলে এতে চা পাতা ছেড়ে দিয়ে ২ মিনিট ফুটিয়ে নিন।অপর একটি পাত্রে দুধ ফুটিয়ে নিন।এবার চুলা থেকে নামিয়ে গরম গরম দুধ ঢেলে ঘন ঘন নেড়ে চায়ে মিশিয়ে নিন।
কাপে চা ছেঁকে নিয়ে এতে মধু মেশান। গরম গরম পান করুন এই ব্যথানাশক চা প্রতিদিন ১ কাপ। এতে দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা দূর হবে।

হঠাৎ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে একি বললেন তারিন ! যা নিয়ে এত আলোড়ন!!


আজকাল ছোট পর্দার তারকারাও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনায় আসছেন। ছোট পর্দার জনপ্রিয় তারকা তারিন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে গতকাল শনিবার রাতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন—
’একদিন আমিও পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব, ফিরব না আর। তুমি কাঁদবে। যখন একা থাকবে, আমার কথা মনে হবে। আমার হাসি আর কণ্ঠ শুনতে পাবে না আর। আমি আর থাকব না তোমাকে জ্বালাতন করতে, খোঁচাতে,
হাসাতে কিংবা বোকার মত ’স্যরি’ বলার জন্য। হয়তো চোখের জলের ভেসে যাবে। কিন্তু আমি তো চলে যাব, বহুদূরে এবং চিরতরে।

সস্তা হয়ে গেল আই-ফোন? এত কম দামে পাওয়া যাবে অবিশ্বাস্য!!


একটা আই-ফোন পকেটে থাকলে যেন হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো অনুভূতি। এই একটা আই-ফোনের জন্য হা-হুতাশের শেষ নেই। এবার হয়তো সেই হতাশা কাটানোর সুযোগটা এসেই গেল।
অবশেষে ভারতে মোবাইল ফোনের বাজার ধরতে কাজটা করেই ফেলল আই-ফোন। আর এর ফলে যেন হাতে স্বর্গ পাওয়ার উপক্রম হল মোবাইল ব্যবহারকারীদের। কারণ, আই-ফোনের দামে বিপুল ছাড় দেওয়া শুরু করেছে অ্যাপেল। সর্বভারতীয় এক নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হওয়া প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আই-ফোনের দাম এতটাই সস্তা করে দেওয়া হয়েছে যে, বিপাকে পড়ে গিয়েছে অন্য মোবাইল সংস্থাগুলি।
প্রকাশিত এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত ছাড়া এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্য কোনও বাজারে আই-ফোন-এর বিক্রিতে বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু, ভারতে বাজার ধরতে হলে যে কম দামে হ্যান্ডসেট বিক্রি করতে হবে, তা বুঝে গিয়েছে অ্যাপেল। তাই হ্যান্ডসেটের দামে বিপুল ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। দোকান থেকে আই-ফোন কিনলে এই ছাড় পাওয়া যাবে এবং সেইসঙ্গে মিলবে ৫ হাজার টাকার ক্যাশ-ব্যাক অফার। ৯০ দিনের মধ্যে এই ৫ হাজার টাকা ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টে ফেরত আসবে বলে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
আই-ফোনের এই বিপুল ছাড়ে যেমন ‘আই-ফোন এসই’-এর ১৬ জিবির দাম পড়ছে ১৯,৯৯৯ টাকা। এর আসল দাম ৩৯,০০০ টাকা। ‘আই ফোন এসই’-এর ৬৪ জিবির দাম পড়ছে ২৫,৯৯৯ টাকা। এর আসল দাম ৪৪,০০০ টাকা। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এই অফারে কোনও ইএমআই নেই। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে একবারে দাম মেটাতে হবে। আর এই ক্রেডিটকার্ডেই ফেরত আসবে ৫ হাজার টাকা।

শুধু ১টি দুই টাকার কয়েন থেকেই চাইলে আয় করতে পারেন ৪ লাখ টাকা। জেনে নিন কিভাবে??


শুধু ১টি দুই টাকার কয়েন থেকেই চাইলে আয় করতে পারেন ৪ লাখ টাকা। জেনে নিন কিভাবে. এযুগে একটি দুটাকার কয়েনের কতটুকুই বা দাম?
আজকাল এক জন ভিখারিকেও দুটাকার কয়েন ভিক্ষা দিতে গেলে তিনি বোধহয় মুখ ফিরিয়ে চলে যাবেন। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন কি, একটি দু’টাকার কয়েনও আপনার সামনে খুলে দিতে পারে তিন লক্ষ টাকা উপার্জনের সুযোগ! শুনে যতই অবাক লাগুক না কেন, অন্ধ্রপ্রদেশের মানুষ বি চন্দ্রশেখর এমনই এক অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন।
বি চন্দ্রশেখরের একটি ভিন্টেজ কয়েনের দোকান চালান। হায়দ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড তেলুগু কনফারেন্সের অফিসের সামনে রাস্তার ধারে ছোট্ট দোকান চন্দ্রশেখরের। পুরনো কয়েন বিক্রি হয় সেই দোকান থেকে। তেলুগু কনফারেন্সের অফিসে সারা দিনই লোকজনের যাতায়াত লেগেই থাকে। তাঁদের মধ্যেই উৎসাহী লোকজনেরা উঁকিঝুঁকি মারেন চন্দ্রশেখরের দোকানে। যাঁরা পুরনো কয়েন সংগ্রহ করতে আগ্রহী, তাঁরা পছন্দমতো কয়েন কিনে নিয়ে যান চন্দ্রশেখরের কাছ থেকে। যা রোজগার হয়, তাতেই সংসার চলে যায় চন্দ্রশেখরের।
কিন্তু নিছক সংসার চালানো নয়, পুরনো কয়েন বেচে লাখপতি হয়ে গিয়েছেন চন্দ্রশেখর। এবং যেটা আরও আশ্চর্যের তা হল এই তথ্য যে, কেবল একটি দুটাকার কয়েন তাঁকে তিন লক্ষ টাকা উপার্জনের সুযোগ করে দিয়েছে। দিন কয়েক আগে একটি দু’টাকার কয়েন তাঁর কাছ থেকে এক জন কিনে নিয়ে গিয়েছেন তিন লক্ষ টাকার বিনিময়ে।
কিন্তু কেন একটি কয়েনের দাম তিন লক্ষ টাকা? কী এমন বিশেষত্ব সেই কয়েনের? আসলে এই বিশেষ দু’ টাকার কয়েনটি তৈরি হয় ১৯৭৩ সালে মুম্বই মিন্টে। মুম্বই মিন্ট ভারতের প্রাচীনতম টাঁকশালগুলির মধ্যে একটি। মুম্বই মিন্টে তৈরি করা মুদ্রায় একটি ডটের আকারে হিরের ছবি খোদাই করা থাকে। ফলে সংগ্রাহকদের কাছে এই ধরনের কয়েনের বিশেষ মূল্য রয়েছে। সেই রকমই কোনও এক উৎসাহী কয়েন সংগ্রাহক এসেছিলেন চন্দ্রশেখরের দোকানে। নিজের সংগ্রহে থেকে যাওয়া এই প্রাচীন কয়েনের দাম যে যথেষ্ট বেশি, তা জানতেন চন্দ্রশেখরও। তিনিও তাই সুযোগ বুঝে চড়া দাম হাঁকেন। দরাদরিতে তিন লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়ে যায় সেই কয়েন। অতএব, কয়েন জমানোর শখ যদি আপনার থাকে, এবং ভাগ্য যদি অনুকূল হয়, তাহলে দু’টাকার কয়েন থেকে লাখপতি হতে পারেন আপনিও।
সৌজন্যেঃ এবেলা