সে [ইয়াকুব (আ.)] বলল, হে আমার পুত্র! তোমার স্বপ্ন-বৃত্তান্ত তোমার ভাইদের সামনে বর্ণনা কোরো না, করলে তারা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে। নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। [সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৫ (প্রথম পর্ব)]
তাফসির : আগের আয়াতে হজরত ইউসুফ (আ.)-এর স্বপ্নের বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছিল। তিনি তাঁর স্বপ্নের কথা তাঁর পিতা ইয়াকুব (আ.)-কে বলেছিলেন।
আলোচ্য আয়াতে হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে। ইয়াকুব (আ.) আল্লাহর নবী ছিলেন। তাই তিনি স্বপ্নের বর্ণনা শুনে বুঝতে পারলেন যে এটা সাধারণ কোনো স্বপ্ন নয়।
বরং ভবিষ্যতে ইউসুফ (আ.) একজন আদর্শ মানুষে পরিণত হবেন। কাজেই তিনি ভাইদের কাছে এই স্বপ্নের কথা না বলার জন্য ইউসুফ (আ.)-কে সাবধান করে দিলেন।
কারণ স্বপ্নের তাৎপর্য অনুধাবন করে ভাইয়েরা ইউসুফ (আ.)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর ক্ষতি করতে পারে।
আলোচ্য আয়াত থেকে জানা যায়, সবার কাছে স্বপ্নের কথা বলে দেওয়া উচিত নয়।
ভালো স্বপ্ন দেখলে করণীয়
যদি কেউ ভালো স্বপ্ন দেখে, তাহলে তিনটি কাজ করবে—এক. আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলবে। দুই. এটা অন্যকে সুসংবাদ হিসেবে জানাবে।
যদি কেউ ভালো স্বপ্ন দেখে, তাহলে তিনটি কাজ করবে—এক. আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলবে। দুই. এটা অন্যকে সুসংবাদ হিসেবে জানাবে।
তিন. স্বপ্ন এমন ব্যক্তিকে বলবে, যে তাকে ভালোবাসে। হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা তার ভালো লাগে, তাহলে সে বুঝে নেবে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সে এ স্বপ্নের জন্য আল্লাহর প্রশংসা করবে আর অন্যকে এ ব্যাপারে জানাবে। আর যদি এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না, তাহলে বুঝে নেবে, এটা শয়তানের পক্ষ থেকে।
তখন সে এ স্বপ্নের ক্ষতি থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং বাঁ দিকে তিনবার থুতু নিক্ষেপ করবে।
কাউকে এ স্বপ্নের কথা বলবে না। মনে রাখবে, এ স্বপ্ন তার ক্ষতি করতে পারবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫৮৩)
খারাপ স্বপ্ন দেখলে করণীয়
যদি কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে, তাহলে ভয়ের কিছু নেই। ভয়ের স্বপ্নে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই।
যদি কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে, তাহলে ভয়ের কিছু নেই। ভয়ের স্বপ্নে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই।
কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখলে এ কাজগুলো করবে—এক. এই স্বপ্নের ক্ষতি ও অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং তিনবার ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম’ পড়বে। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬২)
এ ক্ষেত্রে এই দোয়াও পড়া যায় : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন শাররি হাজিহির রু’ইয়া।’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এই স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে পরিত্রাণ চাই।
দুই. বাঁ দিকে তিনবার থুতু নিক্ষেপ করবে। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬১)
তিন. যে কাতে ঘুমিয়ে খারাপ স্বপ্ন দেখেছে, তা পরিবর্তন করে অন্য কাতে ঘুমিয়ে পড়বে। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬২)। অবস্থা বদলে দেওয়ার ইঙ্গিতস্বরূপ এটা করা হয়ে থাকে।
চার. খারাপ স্বপ্ন দেখলে কারো কাছে তা বলবে না। আর নিজেও এর ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করবে না। (বুখারি, হাদিস : ৬৫৮৩)
পাঁচ. সম্ভব হলে জাগ্রত হয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬৩)
0 comments:
Post a Comment