Subscribe:

থাইরয়েডের রোগীদের যে ৬ টি কাজ কখনোই করা উচিত নয়


থাইরয়েড হচ্ছে হরমোন উৎপাদনকারী প্রজাপতির আকৃতির ছোট গ্রন্থি যা শরীরের বিপাক এবং প্রতিটা কোষ, কলা এবং অঙ্গের কাজের উপর প্রভাব বিস্তার করে। এটি ঘাড়ের নীচের ও মধ্যবর্তী স্থানে থাকে। পুরুষের চেয়ে নারীরাই থাইরয়েডের সমস্যায় ভোগেন বেশি। থাইরয়েডের সাধারণ সমস্যাগুলো হচ্ছে – হাইপারথাইরয়ডিজম, হাইপোথাইরয়ডিজম, থাইরয়ডিটিস, থাইরয়েড নডিউল ইত্যাদি। অনেক থাইরয়েডের সমস্যাই জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে। যদি চিকিৎসা করা না হয় তাহলে থাইরয়েডের সমস্যা আপনার বিপাককে প্রভাবিত করবে এবং আপনার কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, অষ্টিওপোরোসিস এবং বন্ধ্যাত্ব এর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বেশীরভাগ থাইরয়েডের সমস্যাই সারা জীবন থাকে, যা আপনি খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন চিকিৎসা গ্রহণ, খাবার এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে। থাইরয়েডের সমস্যা আছে যাদের তাদের যে কাজগুলো করা ঠিক নয় সেগুলো জেনে নিই চলুন।
১। স্ট্রেস
থাইরয়েডের রোগীদের জন্য স্ট্রেস বা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরী। বস্তুত অতিরিক্ত স্ট্রেসের কারণে থাইরয়েডের সমস্যা বৃদ্ধি বা প্রকাশিত হতে পারে। স্ট্রেসে ভুগলে শরীরে কর্টিসল হরমোন নিঃসৃত হয় যা থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে হস্তক্ষেপ করে।
২। ধূমপান
থাইরয়েডের রোগীদের জন্য ধূমপান করা এবং পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শ ক্ষতিকর। সিগারেটের ধোঁয়ায় সায়ানাইড থাকে যা অ্যান্টিথাইরয়েড এজেন্ট রূপে কাজ করে। এই যৌগটি সরাসরি আয়োডিন গ্রহণ এবং হরমোনের সংশ্লেষণে বাধা দেয়। এছাড়াও ধোঁয়ার অন্যান্য উপাদানও থাইরয়েডের কাজের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যায় আক্রান্তদের টোব্যাকো থেকে দূরে থাকা উচিত থাইরয়েডের লক্ষণের বৃদ্ধি প্রতিরোধের জন্য।
৩। ঔষধ গ্রহণে অবহেলা এবং নিয়মিত চেকআপ না করা
থাইরয়েডের সমস্যা নিরাময়ের জন্য নিয়মিত ঔষধ সেবন করা জরুরী। ভালো অনুভব করলেও নিজে নিজে ঔষধ গ্রহণ করা বন্ধ করে দেয়া ঠিক নয়। নিজে নিজে ভুল মাত্রার ঔষধ গ্রহণ করাও থাইরয়েডের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (TSH) ব্লাড টেস্ট নামক রক্ত পরীক্ষাটি বছরে ১/২ বার করানো উচিত।
৪। সকালে কফির সাথে থাইরক্সিন ট্যাবলেট গ্রহণ করা
থাইরক্সিন ট্যাবলেট সকালে খালি পেটে গ্রহণ করলে ভালোভাবে শোষিত হয়। নাস্তা গ্রহণের ৩০-৬০ মিনিট আগে থাইরক্সিন ট্যাবলেট সেবন করুন। এছাড়াও রাতে ঘুমানোর ২-৩ ঘন্টা আগে গ্রহণ করতে পারেন এই ঔষধ। মনে রাখবেন ফাইবারযুক্ত ও দুধের তৈরি খাবারের সাথে, প্রোবায়োটিকের সাথে, ক্যালসিয়াম ফরটিফায়েড ফ্রুট জুস, ক্যালসিয়াম, আয়রন বা অন্য কোন খনিজের সাপ্লিমেন্ট এবং কফির মত পানীয়ের সাথে থাইরেডের ঔষধ গ্রহণ করা ঠিক নয়। সবচেয়ে ভালো উপায়টি হচ্ছে ১ গ্লাস পানির সাথে এই ঔষধ গ্রহণ করা। একটি নির্দিষ্ট সময়ে বা চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী এই ঔষধ গ্রহণ করা উচিত।
৫। কাঁচা ক্রুসিফেরি সবজি খাওয়া
অতিরিক্ত কাঁচা ক্রুসিফেরি সবজি খাওয়া থাইরয়েডের রোগীদের জন্য খারাপ, বিশেষ করে যাদের আয়োডিনের ঘাটতি আছে তাদের ক্ষেত্রে। এ ধরণের সবজিগুলোতে গ্লুকোসায়ানোলেডস নামক যৌগ থাকে যা থাইরয়েড হরমোন সংশ্লেষণে হস্তক্ষেপ করে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, পালংশাক, এবং মিষ্টি আলু এ ধরণের কয়েকটি সবজি যা কাঁচা খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া জরুরী থাইরয়েডের রোগীদের।
৬। সয়া খাদ্য
যদি আপনার থাইরয়েডের সমস্যা থাকে তাহলে ক্রুসিফেরি পরিবারের সবজির মত সয়া খাদ্য খাওয়ার বিষয়েও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সয়া পণ্যে ফাইটোইস্ট্রোজেন এবং গয়ট্রোজেনিক উপাদান থাকে যা থাইরয়েডের কাজে এবং থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের শোষণে হস্তক্ষেপ করে। তাই থাইরয়েডের সমস্যা আছে যাদের তাদের সয়া সাপ্লিমেন্ট, জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ারড সয়া খাদ্য, সয়া চিজ, সয়াবিন তেল, সয়া আইসক্রিম এবং সয়া বার্গার খাওয়া উচিত নয়।
সূত্র: টপ টেন হোম রেমেডিস
সম্পাদনা: কে এন দেয়া
বিভাগ: লাইফ স্বাস্থ্য
ট্যাগ: থাইরয়েডের সমস্যা জীবনযাত্রা সুস্থ থাকুন

0 comments:

Post a Comment