প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে সাত দিনেই দেশ ঠিক করে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন বগুড়ার হিরো আলম। শুক্রবার দুপুরে একটি রেডিও চ্যানেলের লাইভে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন। রেডিও জকি জানতে চান, মন্ত্রী হলে আপনি কী করবেন?
উত্তরে হিরো আলম বলেন, ‘তিনি মন্ত্রী হতে চান না। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেলে তিনি সাত দিনেই দেশ ঠিক করে ছাড়বেন। ‘ এসময় হিরো আলম ভারতীয় অভিনেতার মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ‘ফাটাকেষ্ট’ ছবির কথা
উল্লেখ করেন। বলেন, আপনি ‘ফাটাকেষ্ট দেখেননি? ছবিতে যেভাবে দেখানো হয়েছে সেভাবেই দেশ ঠিক করে ফেলবো। ‘
রেডিও জকি হিরো আলমকে নেচে দেখাতে বলেন। উত্তরে হিরো আলম বলেন, ‘তিনি নাচতে আগ্রহী নন। তবে সুযোগ পেলে বলিউড অভিনেত্রী সানি লিওনের সঙ্গে নেচে দেখাবেন তিনি। ‘
মানুষের খারাপ মন্তব্য, সমালোচনা কীভাবে নেন জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘এগুলো আমার খুব ভালো লাগে। কারণ গালি দিতে হলে আমার নামটা আগে মুখে নিতে হয়। তার মানে ওই ব্যক্তির মাথায় ‘হিরো আলম’ শব্দটা কাজ করে। সে আমাকে গুরুত্ব দিচ্ছে বলেই এটা করে। ‘
‘মার ছক্কা’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় হিরো আলমের অভিষেক হচ্ছে। ছবিতে প্রচুর অ্যাকশন দৃশ্য আছে বলে জানান হিরো আলম। রেডিও জকি প্রশ্ন করেন, ‘এমন ছিপছিপে শরীর দিয়ে কীভাবে অ্যাকশন দৃশ্য অভিনয় করেছেন? এটা কীভাবে সম্ভব?’ হিরো আলম বলেন, ‘পারি আর না পারি সামনে আগাইয়া যাব। পরে যা হওয়ার হয়ে যাবে।’
কে এই হিরো আলম?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে চর্চিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো হিরো আলম। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে আলমের ভিডিও ও ছবি। কিন্তু কে এই হিরো আলম?
সিডি বিক্রি করতেন আশরাফুল আলম। সেটা বেশ আগের ঘটনা। সিডি যখন চলছিল না তখনই মাথায় আসে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসার। ভাবলেন নিজ গ্রামেই সেটা করবেন, এবং করে ফেললেন। বগুড়ার এরুলিয়া ইউনিয়নের এরুলিয়া গ্রামেই শুরু হয় আলমের ডিশ ব্যবসা।
ছোটবেলা থেকেই অভাব-অনটনের সাথে চলা আলমের পরিবার তাকে আরেক পরিবারের হাতে তুলে দেয়। আলম চলে আসেন একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের বাসায়। আব্দুর রাজ্জাক তাকে ছেলের মতো করেই বড় করে তোলেন। স্নেহ করতেন।
কিন্তু গ্রামে অভাব তো প্রায় মানুষের আছে। আলমের পালক পিতা আব্দুর রাজ্জাকের সংসারও অভাবের ছোঁয়া পায়। স্থানীয় স্কুলে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আলমকে নেমে পড়তে হলো জীবিকা নির্বাহের তাগিদে। সিডি বিক্রি থেকে আলম ডিশ ব্যবসায় হাত দিয়ে সফলতা অর্জন করেন। তার মাসে আয় ৭০-৮০ হাজার টাকা। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখেই আছেন আলম।
কালের কণ্ঠকে আলম বলেন, ”আমি আমার গ্রামের সবার ভালোবাসা পেয়েছি। এই ভালোবাসা আমাকে নিজের হাতে করে খেয়ে বাঁচতে শিখিয়েছে। এখন আমার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আল্লাহর রহমতে সুখেই আছি। ”
কালের কণ্ঠকে আলম বলেন, ”আমি আমার গ্রামের সবার ভালোবাসা পেয়েছি। এই ভালোবাসা আমাকে নিজের হাতে করে খেয়ে বাঁচতে শিখিয়েছে। এখন আমার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আল্লাহর রহমতে সুখেই আছি। ”
সিডির ব্যবসা করতেন আলম। ক্যাসেটে দেখতেন মডেলদের ছবি। সেই থেকে মাথায় ঢোকে মডেল হওয়ার। ২০০৮ সালেই করে ফেলেন একটা গানের সাথে মডেলিং। সেটাই ছিল শুরু। এরপরে সেসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সংসারে মনোযোগী হন। ২০০৯ সালে বিয়ে করেন পাশের গ্রামের সুমী নামের এক তরুণীকে। আলম সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়লেও সুমী পড়েছেন এসএসসি পর্যন্ত। তাদের সংসারে আসে নতুন দুই অতিথি। নিজের নামের সাথে মিলিয়ে রাখেন সন্তানদের নাম। পুত্র আবির ও কন্যা আলো। এখন সংসার আর ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত আলম। পাশাপাশি নিজে কিছু মিউজিক ভিডিও করেন। সেগুলো নিজের ক্যাবল চ্যানেলেই প্রচার করেন। গ্রামের মানুষরাও তাকে বাহবা দেয়। আলম উৎসাহ পান।
আলম বলেন, আমার মডেল হওয়ার ইচ্ছে ছিল আগে। যখন সিডি বিক্রি করতাম। আমি জানি না এসব ইচ্ছে পূরণ হয় কি না, তবে লেগে ছিলাম। হয়েছে। অনেকে বলে বাজে হয়েছে আমি কান দেই না। অনেকে আবার বলে ভালোই হয়েছে। আমি গ্রামের ছেলে মন যা চায় করি। মানুষের কথায় কান দেওয়ার ইচ্ছে নেই।
বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক আলম সম্পর্কে কালের কণ্ঠকে বলেন, ”আলম ছেলে খারাপ না। কষ্ট করে বড় হয়েছে আলম। সে গান গাইতে পারে না, নাচতেও পারে না। তবে তার মডেলিং এর শখ আছে এটা জানি। ”
এরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, ”আলম সম্পর্কে জানি সে ডিশ ব্যবসা করে। নির্বাচনও করে। দুইবার দাঁড়িয়েছিল। হেরে গেছে। তবে এলাকার মানুষজন তাকে পছন্দ করে। নির্বাচনে এবার সে দ্বিতীয় হয়েছে। ছেলে হিসেবে খারাপ না, তবে শুনছি মডেলিং-এর দিকে তার ঝোঁক। ”
আশরাফুল আলম কালের কণ্ঠকে নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, ”আমি এবার মাত্র ৭০ ভোটে হেরেছি। এর আগেরবারও হেরেছি অল্প ভোটে। তবে এলাকার মানুষের ভালোবাসার জন্য আমি আরেকবার নির্বাচন করবো। আমি বলেছিলাম আর দাঁড়াবো না, কিন্তু ভালোবাসার জন্য পরেরবার আরেকবার দাঁড়াবো। ”
মডেলিং সম্পর্কে আলম বলেন, ”আমার ভিডিওগুলো ফেসবুক, ইউটিউবে ছড়িয়ে যাওয়ায় এখন অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে দুটি মিউজিক ভিডিও করার জন্য রাজি হয়েছি। আজ রাতে ঢাকা যাচ্ছি। ” কার সাথে, কিসের মিউজিক ভিডিও এমন প্রশ্নের জবাবে আলম জানান, ‘কুসুম কুসুম প্রেম’ ছবির সজলের সাথে কাজ করার কথা। ”সজল ভাই আমাদের বগুড়ার ছেলে। ”
হিরো আলম কি সুপারস্টার?
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিরো আলমকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে দেওয়া হ্যাশট্যাগসংবলিত কয়েকটি টুইট ও স্ট্যাটাস
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন ‘হিরো আলম’। এবার শুধু দেশেই নয়, পাশের দেশ ভারতেও তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ভারতীয়রা হিরো আলমকে বাংলাদেশের ‘সুপারস্টার’-এর তকমা দিয়ে দিয়েছেন। এমনকি এই তকমার ভিত্তিতে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমও তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করতে শুরু করেছে।
দেশের বাইরে হিরো আলমের নাম ছড়িয়ে পড়ে যখন তিনি ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি পত্রিকা। সেই ছবি ও প্রতিবেদনের জের ধরে ১৬ ডিসেম্বর বিবিসি হিন্দি প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিরো আলমকে নিয়ে। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি একে একে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমগুলোতেও তিনি খবরের শিরোনাম হন। জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডের মতো প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করে। সেখানে অনেকেই হিরো আলমকে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের অন্যতম তারকা বলে অভিহিত করেন। তাঁরা বলেন, এ পর্যন্ত ৫০০ মিউজিক ভিডিও এবং র্যাপ গান তৈরি করেছেন হিরো আলম। তাঁর ফেসবুকের অনুসারীর সংখ্যার ওপর ভিত্তি করেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো তাঁকে তারকা বলে ধরে নিয়েছে। এ জন্যই মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে গুগলে হিরো আলমকে সালমান খানের চেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে হিরো আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিও শুনেছি। এ জন্যই বিদেশ থেকে ভক্তদের ফোন আসছে অনেক।’
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন ‘হিরো আলম’। এবার শুধু দেশেই নয়, পাশের দেশ ভারতেও তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ভারতীয়রা হিরো আলমকে বাংলাদেশের ‘সুপারস্টার’-এর তকমা দিয়ে দিয়েছেন। এমনকি এই তকমার ভিত্তিতে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমও তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করতে শুরু করেছে।
দেশের বাইরে হিরো আলমের নাম ছড়িয়ে পড়ে যখন তিনি ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি পত্রিকা। সেই ছবি ও প্রতিবেদনের জের ধরে ১৬ ডিসেম্বর বিবিসি হিন্দি প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিরো আলমকে নিয়ে। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি একে একে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমগুলোতেও তিনি খবরের শিরোনাম হন। জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডের মতো প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করে। সেখানে অনেকেই হিরো আলমকে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের অন্যতম তারকা বলে অভিহিত করেন। তাঁরা বলেন, এ পর্যন্ত ৫০০ মিউজিক ভিডিও এবং র্যাপ গান তৈরি করেছেন হিরো আলম। তাঁর ফেসবুকের অনুসারীর সংখ্যার ওপর ভিত্তি করেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো তাঁকে তারকা বলে ধরে নিয়েছে। এ জন্যই মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে গুগলে হিরো আলমকে সালমান খানের চেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে হিরো আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিও শুনেছি। এ জন্যই বিদেশ থেকে ভক্তদের ফোন আসছে অনেক।’
তবে এ ধরনের প্রচারের কারণে বাংলাদেশের শিল্পীদের ব্যাপারে যে নেতিবাচক বার্তা ভারতে যাচ্ছে, তা নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা। টুইটার ও ফেসবুকে ‘হিরো আলম’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে অনেকেই শেয়ার করছেন নানা ধরনের আপত্তিকর কৌতুক। এর সঙ্গে অনেকে আবার হ্যাশট্যাগ দিয়ে ‘বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশি অ্যাক্টর’ প্রসঙ্গটিও জুড়ে দিচ্ছেন। হিরো আলমের সঙ্গে ভারতীয়দের কৌতুকের সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও দেশের শিল্পীদের ভাবমূর্তিও। ইউটিউবে প্রকাশিত হিরো আলমের মিউজিক ভিডিওতে তাঁর ব্যক্তিত্ব, অভিব্যক্তি ও বাচনভঙ্গি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় বিভিন্ন পেজ ও গণমাধ্যম রসিকতা করছে। গুটি কয়েক গণমাধ্যম হিরো আলমকে ‘সামাজিক মাধ্যমের তারকা’ বলে আখ্যায়িত করছে বটে, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তাঁকে বাংলাদেশের বিনোদনজগতের তারকার কাতারেই ফেলছে এবং গুগলে তাঁকে খুঁজেই যাচ্ছে।এই খোঁজাখুঁজিতে হিরো আলম হয়তো বহুদূর যেতে পারবেন, কিন্তু এতে বাংলাদেশের শিল্পীদের ভাবমূর্তি বাইরের দেশে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আলোচিত হয়ে উঠতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক ব্যক্তিত্ব। সেই শঙ্কার কথাই জানালেন গণমাধ্যম বিশ্লেষক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তিনি বললেন, ‘এগুলো হচ্ছে ভারতে আমাদের চ্যানেল দেখা না যাওয়ার প্রভাব এবং আমাদের সিনেমা সেখানে নিয়মিত প্রদর্শিত না হওয়ার প্রভাব। যেকোনো লোক যেকোনো কিছু ক্লেইম করতে পারে। সমস্যাটির সমাধান হতে পারে ওই দেশে আমাদের টিভি অনুষ্ঠান-সিনেমা নিয়মিত প্রদর্শিত হলে। নইলে এ রকম বহু হিরো আলম বের হবে ভবিষ্যতে।’
উল্লেখ্য, বগুড়া জেলায় স্থানীয় কেব্ল সংযোগ স্থাপনের ব্যবসা রয়েছে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের। সেই সুবাদেই তিনি নিজের স্থানীয় সংযোগগুলো প্রচারের জন্য কিছু মিউজিক ভিডিও তৈরি করেছিলেন বিভিন্ন সময়। যা এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে। দেশজুড়ে হিরো আলমের ভিডিও নিয়ে কৌতুক শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় তাঁর ভিডিও নিয়ে হয় ট্রল ও মিম। কিন্তু এখন দেশের বাইরেও বাংলাদেশের শিল্পীদের প্রতিনিধি হিসেবে হিরো আলমের নাম ছড়িয়ে পড়ায় সেই কৌতুক শঙ্কায় পরিণত হচ্ছে।
0 comments:
Post a Comment